১. অযুর নিয়ত করা।
অর্থাৎ পবিত্রতা অর্জন বা নামায সহীহ হওয়া অথবা আল্লাহ তা’আলার নৈকট্য হাছিলের নিয়ত করা। বুখারী-৬৬৮৯
২. অযুর শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়া।
এক রেওয়ায়েতে রয়েছে, যে ব্যক্তি বিসমিল্লাহি ওয়াল হামদুলিল্লাহ বলে উযু শুরু করবে ফেরেশতারা তার জন্য ছাওয়াব লিখতে থাকবে যতক্ষন তার অযু ছুটে না যায়।
তিরিমিজী-২৫; আল-মুজামুস সগীর-১৯৬
৩. উভয় হাতের কব্জিসহ পৃথকভাবে তিনবার করে ধৌত করা।
মুসলিম- ৫৬১
৪. মিসওয়াক করা।
মিসওয়াক পাওয়া না গেলে আঙ্গুল দ্বারা দাত পরিস্কার করা।
বুখারী- ৮৮৭; বাইহাক্বী- ১৭৬; মারাকিল ফালাহ-১/১০৫
৫. মিসওয়াক প্রস্থ বরাবর করা সুন্নাত, উপর নিচে নয়। সুনানে বাইহাক্বী- ১৭৩
৬. তিনবার কুলি করা।
মুসলিম- ৫৮০; আবু দাউদ- ১০৮
৭ তিনবার নাকের ভিতরে পানি পোঁছান।
আবু দাউদ- ১০৯
৮. প্রতিবার নাকে পানি দেওয়ার পর নাক ঝাড়া । মুসলিম- ৫৮০
বি:দ্র: রোজাদারগন নাকে ভালোভাবে পানি দেওয়া থেকে বিরত থাকবে।
৯. সমস্ত মুখমন্ডল দুই হাত দ্বারা তিনবার ধৌত করা। তবে পানি শুধু ডান হাতে নিবে।
বুখারী- ১৫৯; আবু দাউদ- ১৪৫
১০. দাড়িতে একবার পানি পৌঁছিয়ে দাড়ি খিলাল করা। আবূ দাউদ- ১৪৫
দাড়ি খিলাল করার মাসনূন পদ্ধতি হল, ডান হাতের তালু সামনের দিকে রেখে গলার দিকে দাড়ির নীচ দিয়ে উপর দিকে খিলাল করা।
ইবনে মাজাহ- ৪৩২
১১. উভয় হাত কনূইসহ তিনবার ধৌত করা। প্রথমে ডান হাত ধোয়া অতঃপর বাম হাত।
মুসলিম- ৫৬০
১২. উভয় হাতের আঙ্গুল সমূহ খিলাল করা। হাতে আংটি থাকলে তা নাড়াচাড়া করা।
তিরমিজী- ২৯; বাইহাক্বী- ২৬৩; আবু দাউদ- ১৯
১৩. সমস্ত মাথা একবার মাসেহ করা।
বুখারী-১৯২
মাথা মাসেহ দুইভাবে করা যায়। এক, উভয় হাতের মধ্যমা থেকে কনিষ্ঠা পর্যন্ত এই তিন আঙ্গুলের পেট মাথার অগ্রভাবে রেখে পেছনে টেনে নিয়ে আসবে। অতঃপর উভয় হাতের তালু মাথার দুই পাশে রেখে সামনের দিকে টেনে আনবে। দুই, উভয় হাতের তালু ও আঙ্গুলের পেট দ্বারা পূরো মাথা সামনে থেকে পেছনের দিকে একবারে মাসেহ করবে।
বাইহাক্বী- ২৭৬; আদ্দুররুল মুখতার ১/২৪৩
১৪. মাথা সামনের দিক থেকে মাসেহ শুরু করা।
বুখারী- ১/৩১
১৫. উভয় কান মাসেহ করা।
উভয় হাতের কনিষ্ঠা আঙ্গুলের অগ্রভাগ দ্বারা উভয় কানের ছিদ্র মাসেহ করবে। অতঃপর শাহাদাত আঙ্গুলের অগ্রভাগ দ্বারা কানের ভেতরের ভাজগুলো মাসেহ করবে। তারপর বৃদ্ধঙ্গুলির পেট দ্বারা কানের বাইরে মাসেহ করবে।
নাসাঈ- ১০২; বাইহাক্বী- ৩১২
১৬. গর্দান (ঘাড়) মাসেহ করা। গলা মাসেহ করা বিদআত।
মারাকিল ফালাহ- ১/১১৫
১৭. উভয় পা তিনবার ধৌত করা। প্রথমে ডান পা ধোয়া অতঃপর বাম পা ধোয়া।
মুসলিম- ৫৬০
১৮. পায়ের আঙ্গুলগুলো বাম হাতের কনিষ্ঠ আঙ্গুল দ্বারা খিলাল করা। ডান দিক দিয়ে শুরু করে বাম দিকে যাওয়া।
তিরমিজী- ৪০; নাসায়ী- ১১২
১৯. ডান দিকের অঙ্গ সমূহ আগে ধৌত করা।
বুখারী- ১৬৭
২০. অযুর সমস্ত অঙ্গ তিনবার ধৌত করা।
বুখারী- ১৫৯
২১. অযুর সমস্ত অঙ্গ গুলো ভালভাবে ডলে ডলে ধৌত করা।
মুসলিম- ১/১২৫; নাসাঈ- ১/১১; মুসনাদে আহমাদ- ১৬৪৪১; মুস্তাদরাকে হাকেম- ৫৭৬
২২. এক অঙ্গ ধোয়ার পর অন্য অঙ্গ ধৌত করতে বিলম্ব না করা।
অর্থাৎ এক অঙ্গ শুকিয়ে যাবার পূর্বে অন্য অঙ্গ ধৌত করা ।
আবূ দাউদ- ১৭৩; যাদুল মা’য়াদ-১/১৮৭
২৩. তারতীবের সাথে উযূ করা।
অর্থাৎ অঙ্গসমূহ ধৌত করার ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা বজায় রাখা।
সূরা মায়িদাহ- ৬; বুখারী- ১৫৯
২৪. কষ্টের সময় অর্থাৎ যখন শীত বা অন্য কোন কারনে উযূ করতে কষ্ট হয় তখনও উযূর অঙ্গসমূহ ভালভাবে ধৌত করা।
মুসলিম- ৬১০
২৫. অযুর মাঝে এ দুআ পড়া-
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لي ذَنْبِي، وَوَسِّعِ لِي فِي دَارِي، وَبارِكْ لِي فِي رِزْقِي
নাসাঈ; আসসুনানুল কুবরা-৯৯০৮
২৬. অযুর শেষ করে কালিমায়ে শাহাদাত পড়া-
أشْهَدُ أنْ لا إله إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لا شَرِيك لَهُ، وأشْهَدُ أنَّ مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ
আবূ দাউদ-১৬৯
২৭. অতঃপর এ দুআ পড়া –
اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِنَ التَوَّابِينَ، واجْعَلْني مِنَ المُتَطَهِّرِينَ،
হাদীস শরীফে আছে, যে ব্যক্তি উত্তমরূপে উযূ করে উক্ত দুআ পড়বে তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে যাবে। সে যেটা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশ করতে পারবে।
তিরমিজী- ৫৫
২৮. যে পাত্র থেকে হাত দিয়ে পানি নিয়ে অযু করা হয়, সে পাত্রে উযূর পর অবশিষ্ট যে পানি থাকে তা অথবা তার কিয়দাংশ দাঁড়িয়ে পান করা।
বুখারী- ৫৬১৬; নাসায়ী- ১৩৬; ইলাউস সুনান ১/১৩১