দ্বীনদার কুমারী মেয়ে বিয়ে করা উত্তম

কেমন মেয়েকে বিয়ে করবো?? কি ধরনের মেয়েকে বিয়ে করবো? বিয়ের ক্ষেত্রে কি শুধু দ্বীনদারই দেখা উচিত??

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, চারটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে মেয়েদেরকে বিয়ে করা হয়ঃ তার সম্পদ, তার বংশমর্যাদা, তার সৌন্দর্য ও তার দীনদারী।সুতরাং তুমি দীনদারীকেই প্রাধান্য দেবে নতুবা তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। (১)

এই হাদিস থেকে বুঝা যায়: মানুষ সাধারন চার জিনিস দেখে বিয়ে করে। কিন্তু মুসলমানদের বিয়ের ক্ষেত্রে প্রথম এবং প্রধান শর্ত হলো দ্বীনদারিতা। এখানে কোনো ছাড় নাই। নিজেকে যেমন দ্বীনদার হতে হবে তেমনি বিয়ের ক্ষেত্রে মেয়েকেও দ্বীনদার দেখেই বাছাই করতে হবে।

কিন্তু দ্বীনদার পাওয়ার পরেও আরো অন্যান্য গুন দেখা যেতে পারে। যদি হয় আলহামদুলিল্লাহ। আর যদি না হয় তাহলে দ্বীনদারিতার ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেয়া যাবে না।

যে মেয়ে বিয়ে করবেন দ্বীনদারিতার পাশাপাশি দেখতে হবে – আপনার কাছে তাকে ভালো লাগে কি না..!

আল্লাহ তা’আলা বলেন: বিয়ে করবে নারীদের মধ্যে যাকে তোমাদের ভাল লাগে। (২)

রাসুল (স:) বলেন: এমন নারীকে বিয়ে করে, যে প্রেমময়ী এবং অধিক সন্তান প্রসবকারী। কেননা আমি অন্যান্য উম্মাতের কাছে তোমাদের সংখ্যাধিক্যের কারণে গর্ব করবো।(৩)

প্রশ্ন হলো প্রেমময়ী কেমন নারীরা হয়?

এটা খুব ভালোভাবেই বোঝা যায়- কম বয়সী মেয়েরা। এরাই অধিক লজ্জাবতী থাকে।উৎফুল্ল থাকে। এর হাসির মাঝেও প্রান থাকে। যাদের পুর্বে কোনো পুরুষের সাথে সংসার হয়নি তারা সাধারনভাবেই কোনো স্মৃতির সাথে বন্ধি থাকে না। তাদের মন উদাস থাকে না।কুমারি মেয়েদের সাথে হাসিটাট্টা করা যায়। কৌতুক করা। মজা করা। রোমান্স করা যায়।মিষ্টি মিষ্টি কথা বলা যায়।

যে কারনে রাসুল (স:) সবাইকে কুমারী মেয়ে বিয়ে করার জন্য উৎসাহ দিতেন এবং যুবকযুবতিদের দ্রুত বিয়ের পরামর্শ দিতেন যাতে তারা যৌবনের স্বাদ পরিপুর্ন উপভোগ করতে পারে।

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি বিয়ে করলে রাসুলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কেমন মেয়ে বিয়ে করেছ? আমি বললাম, পূর্ব বিবাহিতা মেয়েকে বিয়ে করেছি। তিনি বললেন, কুমারী মেয়ে এবং তাদের কৌতুক তুমি চাও না? (রাবী মুহাজির বলেন) আমি এ ঘটনা ‘আমর ইব্‌নু দীনার (রাঃ) – কে জানালে তিনি বলেন, আমি জাবির ইব্‌নু ‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) – কে বলতে শুনেছি, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বলেছেন, তুমি কেন কুমারী মেয়েকে বিয়ে করলে না, যার সাথে তুমি খেলা-কৌতুক করতে এবং সে তোমার সাথে খেলা-কৌতুক করত?(৪)

এছাড়া রাসুল (স:) কুমারী ও পুর্ব বিবাহিত মহিলা দুইজন থেকে একজন বাছাই করতে বলায় তিনি কুমারী বাচাই করার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! মনে করুন আপনি একটি ময়দানে পৌঁছেছেন, সেখানে একটি গাছ আছে যার কিছু অংশ খাওয়া হয়ে গেছে। আর এমন একটি গাছ পেলেন, যার কিছুই খাওয়া হয়নি। এর মধ্যে কোন্‌ গাছের পাতা আপনার উটকে খাওয়াবেন। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উত্তরে বললেন, যে গাছ থেকে কিছুই খাওয়া হয়নি। এ কথার উদ্দেশ্য হল – নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে ব্যতীত অন্য কোন কুমারীকে বিয়ে করেননি।(৫)

আমাদের দেশে যেহেতু যুবকদের জন্য এক বিয়ে করাই অনেকের জন্য কষ্ট সাধ্য ব্যাপার সেহেতু বিয়ে করার সময় অবশ্যই দ্বীনদার এবং কুমারী মেয়ে পছন্দ করুন, যার সাথে ভালোবাসার রোমান্টিক একটি সংসার গড়া যায়।জীবন এবং যৌবন দুইটাই আল্লাহর হুকুম মতো উপভোগ করা যায়।

আল্লাহ এই নারী পুরুষের সম্পর্ককে একটি নিদর্শন হিসেবে বর্ননা করেছেন এবং পরস্পরকে পরস্পরের সুখ শান্তি ও ভালোবাসার জন্য সৃষ্টি করেছেন।

তাই নেককার দ্বীনদার এবং প্রেমময়ী স্ত্রী পেয়ে অবশ্যই আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করুন।

তথ্যসুত্র :
১. মুসলিম ১৭/১৫, হাঃ ১৪৬৬, আহমাদ ৯৫২৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৭১৯
২. সুরা নিসা: ৩
৩. আবু দাউদ: ২০৫০
৪. সহীহ বুখারী: ৪৭০৭, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪৭০৯)
৫. সহীহ বুখারী: ৪৭০৪, ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ৪৭০৬

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *