
যে সকল বোন রমজান পেল তাদের উদ্দেশ্যে সকল প্রশংসা সেই মহান আল্লাহ তাআলার যিনি আমাদের রমজান মাস নসীব করেছেন। আমরা তার কাছেই প্রার্থনা করছি। তিনি যেন আমাদের রমজানের সিয়াম ও কিয়াম আদায় করার তাওফীক দান করেন। আমাদের ভুল-ত্রুটিগুলো তিনি যেন ক্ষমা করে দেন। আর সালাত ও সালাম বর্ষিত হোক সর্বশ্রেষ্ট নবী ও রাসূল মুহাম্মাদ ও তার সকল সাহাবীদের উপর।
এটি একটি চিঠি যা আমি আমার মুসলিম বোনদের জন্য লিখেছি। চিঠিটি কয়েকটি পরিচ্ছেদে ভাগ করে আলোচনা করেছি। আল্লাহর কাছেই দুআ করছি তিনি যেন এর মাধ্যমে আমাদের উপকৃত করেন। তিনিই সর্বশ্রোতা, সাড়া দানকারী।
_____
❏ প্রথম পরিচ্ছেদ:
আপনাকে সৃষ্টির মূল উদ্দশ্যে সম্পর্কে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। আল্লাহ তাআলা বলেন :
وَمَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ (الذاريات : 56)
“আর জিন ও মানুষকে কেবল এ জন্যই সৃষ্টি করেছি যে তারা আমার ইবাদাত করবে।” (সূরা আয যারিয়াত, আয়াত ৫৬)
ইমাম নববী রহ. বলেন, এ আয়াত দ্বারা স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দেয়া হল, মানব ও জিনকে ইবাদাতের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। কাজেই যে উদ্দেশ্যে তাদের সৃষ্টি করা হয়েছে সে উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে তৎপর থাকতে হবে। যুহদ অবলম্বনের মাধ্যমে দুনিয়া থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে হবে। মনে রাখতে হবে দুনিয়াটা হল অস্থায়ী। স্থায়ীভাবে বসবাসের জায়গা এটা নয়।
আমার মুসলিম বোন!
আপনার প্রতি আল্লাহর নেআমাত ও অনুগ্রহ সম্পর্কে একটু চিন্তা করুন। তিনি বলেছেন :
وَإِنْ تَعُدُّوا نِعْمَةَ اللَّهِ لَا تُحْصُوهَا (إبراهيم : 34)
“যদি তোমরা আল্লাহর নেআমাতকে গণনা করতে যাও তবে তা গণনা করতে পারবে না।” (সূরা ইবরাহীম, আয়াত ৩৪)
তিনি আপনাকে এসকল নেআমাতে ডুবিয়ে রেখেছেন। এসব নেআমাতের মধ্যে শ্রেষ্ট নেআমাত হল দীনে ইসলাম। এ বিশ্বে কত কোটি মানুষ আছে তারা এ নেআমাত থেকে বঞ্চিত। তাদের সৌভাগ্য হয়নি, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই ও মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল এ কথাটির স্বাক্ষ্য দেয়া।
আল্লাহর এ অনুগ্রহ যাকে ইচ্ছা তিনি তাকে দিয়ে থাকেন।
এরপর আল্লাহ তাআলার প্রশংসা করুন এ জন্য যে, তিনি আপনাকে হিদায়াত ও সঠিক পথে চলার তাওফীক দিয়ছেন। কত মুসলিম নামধারী মানুষ আছে যারা ইসলামের ঘরে জন্ম নিয়েও হিদায়াত বা সঠিক পথপ্রাপ্ত হয়নি।
আর আপনি আল্লাহর নেআমাত নিয়ে সুন্দরভাবে জীবন যাপন করছেন। তার প্রশস্ত রিযক ভোগ করছেন। তার দেয়া সুসাস্থ্য আপনি উপভোগ করছেন। কাজেই আপনার কর্তব্য হল আল্লাহর আনুগত্যের মাধ্যমে তার নেআমাতের শোকরিয়া আদায় করা। তার নিষেধ ও পাপাচার থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে তার প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়া। তাহলে তিনি এ নেআমাতকে আপনার জন্য অক্ষুন্ন রাখবেন। নেআমাত বাড়িয়ে দেবেন। আল্লাহ তাআলা বলেন:
لَئِن شَكَرْتُمْ لأَزِيدَنَّكُمْ (إبراهيم : 7)
যদি তোমরা শোকরিয়া আদায় করো তাহলে তিনি তোমাদের বাড়িয়ে দেবেন। (সূরা ইবরাহীম, আয়াত ৭)
মনে রাখবেন, মানুষ যা কিছু ইবাদত-বন্দেগী করে আল্লাহর পাওনা তার চেয়ে অনেক বেশী। মানুষ যা গণনা করে তার চেয়ে তার প্রতি আল্লাহর নেআমাত অনেক অনেক বেশী। কাজেই সকাল সন্ধ্যায় আপনি তাওবা করুন। তার দিকে ফিরে আসুন।
______
❏ দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ :
আল্লাহ তাআলার নেআমাতের একটি হল তিনি আপনার আয়ু দীর্ঘ করে দিয়েছেন ফলে আপনি এই রমজান মাস ধরতে পেরেছেন। আপনি একটু ভেবে দেখুন, আপনার কত পরিচিত জন এ রমজান ধরতে পারেনি। এ রমজান ধরার আগেই মৃত্যু তাদের ধরে ফেলেছে। তারা ধনে জনে কম ছিল না কোন দিক দিয়ে। দীর্ঘ জীবন লাভ করা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন ও সৎকর্ম করার সুযোগ সৃষ্টি করে থাকে। এজন্য মুসলিম ব্যক্তির বড় পুজি হল তার হায়াত। তাই আপনার উচিত হবে আপনার সময় ও জীবন যেন অকারণে ব্যয়িত না হয়। চিন্তা করে দেখুন, যারা আপনার সাথে গত বছর রমজানের সিয়াম শুরু করেছিল তারা সকলে কি ঈদ পেয়েছিল? ভেবে দেখুন, তারা যদি আবার দুনিয়াতে ফিরে আসতেন তাহলে কী করতেন? তারা কি খেল-তামাশা, মার্কেট, বন্ধু-বান্ধবী আর বিনোদনে মত্ত হয়ে যেতেন, না বেশী করে সৎকর্ম করতে কোমর বেধে লেগে যেতেন? কখনো তারা দুনিয়ার জীবন নিয়ে মত্ত হতেন না। কারণ তারা ভাল করে জেনেছেন:
﴿ فَمَن يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْراً يَرَهُ (7) وَمَن يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرّاً يَرَهُ ﴾ [الزلزلة:8،7]
যে অনু পরিমাণ ভাল কাজ করবে সে তা দেখতে পাবে। আর যে অনু পরিমাণ খারাপ কাজ করবে সেও তা দেখতে পাবে। (সূরা যিলযাল,৭-৮)
আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সেই বাণীটি পাঠ করে আপনি নিজের পাথেয় যোগার করতে সচেষ্ট হতে পারেন। তিনি বলেছেন: বার্ধক্য আসার পূর্বে যৌবন-কে, অসুস্থতা আসার পূর্বে সুস্থতা-কে, ব্যস্ততা আসার পূর্বে অবসর-কে আর মৃত্যু আসার পূর্বে জীবনকে সুযোগ মনে করবে।
আর আপনি সর্বশ্রেষ্ট মানুষদের মধ্য থেকে একজন মানুষ হতে চেষ্টা করবেন। যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাদীসে এসেছে: আবু বাকরাতা রা. থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল ইয়া রাসূলাল্লাহ! শ্রেষ্ঠ মানুষ কে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, যার জীবন দীর্ঘ হয়েছে আর কর্ম সুন্দর হয়েছে। তাকে আবার প্রশ্ন করা হল, নিকৃষ্ট মানুষ কে? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, যার জীবন দীর্ঘ হয়েছে কিন্তু কর্ম খারাপ হয়ে গেছে। (মুসলিম)
______
❏ তৃতীয় পরিচ্ছেদ:
নিয়্যতের ব্যাপারে ইখলাছ অবলম্বন ও আল্লাহ তাআলার প্রতি একাগ্র হতে হবে। ইখলাছ হল, সকল কাজ-কর্ম ইবাদত-বন্দেগীতে আল্লাহ-কে সন্তুষ্ট করার নিয়্যত রাখা।
আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে আপনি কি লোক দেখানোর জন্য বা মানুষের কাছে প্রচার করার জন্য ভাল কাজ করছেন, নাকি আল্লাহ তাআলাকে সন্তুষ্ট করার ইচ্ছায় এগুলো সম্পাদন করছেন?
গোপনে এমন কিছু নেক আমলও করুন যা আল্লাহ ব্যতীত অন্য কেহ জানবে না। যেমন নফল নামাজ, রাতের অন্ধকারে আল্লাহর ভয়ে কান্নাকাটি করা, গোপনে আল্লাহর কাছে দুআ-প্রার্থনা করা, গোপনে কাউকে দান-সদকা করা ইত্যাদি।
জেনে রাখুন, আল্লাহ তাআলা শুধু মুত্তাকী ও মুখলেছ মানুষের নেক আমলগুলো কবুল করেন। যেমন তিনি বলেন,
﴿ إِنَّمَا يَتَقَبَّلُ اللّهُ مِنَ الْمُتَّقِينَ ﴾ [المائدة:27]
আল্লাহ শুধু মুত্তাকীদের থেকে কবুল করেন। (সূরা মায়েদা-২৭)
আপনি যেন তাদের অন্তর্ভূক্ত না হয়ে যান যারা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর অনুসরণ ত্যাগ করার কারণে জান্নাত থেকে বঞ্চিত হবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমার সকল উম্মত জান্নাতে প্রবেশ করবে তবে তারা নয়, যারা আমাকে অস্বীকার করেছে। সাহাবীগন জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনার উম্মত হয়ে আবার কে আপনাকে অস্বীকার করল? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, যে আমাকে অনুসরণ করল সে জান্নাতে প্রবেশ করবে, আর যে আমার অবাধ্য হল সে আমাকে অস্বীকার করল। (বুখারী)
______
❏ চতুর্থ পরিচ্ছেদ:
সর্বদা আল্লাহর স্মরণ ও সর্বাবস্থায় আল্লাহর জিকির করুন। যেন আপনার মুখ সর্বদা আল্লাহর জিকিরে ভিজে থাকে। যে সকল দুআ-কালাম রয়েছে সেগুলো সব সময় আমল করুন।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
﴿ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اذْكُرُوا اللَّهَ ذِكْراً كَثِيراً (41) وَسَبِّحُوهُ بُكْرَةً وَأَصِيلاً ﴾ [الأحزاب:42،41]
হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা বেশী বেশী করে আল্লাহর জিকির করো। সকাল সন্ধ্যায় আল্লাহর তাসবীহ করো। (সূরা আহযাব- ৪১-৪২)
তিনি জিকিরকারীদের সম্পর্কে আরো বলেন,
﴿ وَالذَّاكِرِينَ اللَّهَ كَثِيراً وَالذَّاكِرَاتِ أَعَدَّ اللَّهُ لَهُم مَّغْفِرَةً وَأَجْراً عَظِيماً ﴾ [الأحزاب:35].
আর জিকিরকারী পুরুষ ও জিকিরকারী নারী. তাদের জন্য আল্লাহ প্রস্তুত করেছেন ক্ষমা ও মহা-পুরুস্কার। (সূরা আহযাব-৩৫)
হাদীসে এসেছে, আয়েশা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সবসময় আল্লাহর জিকির (স্মরণ) করতেন। (মুসলিম)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, মুফাররিদগণ বিজয়ী হয়েছে। সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! মুফাররিদ কারা? তিনি বললেন, সে সকল জিকিরকারী পুরুষ ও জিকিরকারী নারী যারা বেশী করে আল্লাহ তাআলার জিকির (স্মরণ) করে। (মুসলিম)
ইবনুল কায়্যিম রহ. বলেন, মোট কথা হল, মানুষ যখন আল্লাহর স্মরণ থেকে বিমূখ হয় আর পাপাচারে লিপ্ত হয়, তখন তার জীবন ও সময় ধ্বংস হয়ে যায়। এটা হিসাব দিবসে সে অনুভব করবে আর বলবে,
﴿ يَا لَيْتَنِي قَدَّمْتُ لِحَيَاتِي ﴾ [الفجر:24].
হায় আফসোস! যদি আমি কিছু (নেক আমল) আগে পাঠাতাম আমার এই (পরকালের) জীবনের জন্য। (সূরা ফাজর-২৪)
হে আমার বোন! জেনে রাখুন, আপনার মৃত্যুর পর কেহ আপনার জন্য নামাজ পড়বে না, রোযা রাখবে না। তাই আপনি আপনার জীবনটাকে কাজে লাগান। বেশী বেশী করে ভাল কাজ, সৎকর্ম, আল্লাহর স্মরণ, ইবাদত-বন্দেগী করতে থাকুন।
______
❏ পঞ্চম পরিচ্ছেদ:
প্রতিদিন আপনি কুরআন তেলাওয়াত ও অধ্যায়ন করুন। আপনি এ বিষয়ে একটি রুটিন করে নিতে পারেন। প্রতি ফরজ নামাজের পর যদি এক পারা করে তেলাওয়াত করা হয় তবে দৈনিক পাচ পারা তেলাওয়াত সম্পন্ন হয়ে যায়। আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহে দেখা যায় যে, রমজানের শুরুর সময় থেকে আমাদের মধ্যে ইবাদত-বন্দেগীর প্রতি মনোযোগ পরিলক্ষিত হয়। রমজানের শেষ দিনগুলো যত কাছাকাছি চলে আসে আমাদের অলসতা তত বেড়ে যায়। ক্লান্তিতে পেয়ে বসে। হতে পারে শেষ দিনগুলোতে আমরা কুরআন তেলাওয়াতের সময় একেবারেই পাব না। তাই রমজানের প্রথম দিকেই কুরআন তেলাওয়াতের প্রতি বেশী যত্নবান হওয়া উচিত।
কুরআন তেলাওয়াতের অনেক ফজিলত রয়েছে। হাদীসে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার কিতাব থেকে একটি হরফ পাঠ করবে তার দশটি সওয়াব সমপরিমাণ একটি সওয়াব অর্জন হবে। আমি বলছি না যে, আলিফ-লাম-মীম একটি হরফ। বরং আলিফ একটি হরফ, লাম একটি হরফ, মীম একটি হরফ। (তিরমিজী)
ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যার মধ্যে আল কুরআনের কোন কিছু নেই সে একটি বিরান (পরিত্যাক্ত) ঘরের মত। (তিরমিজী)
আবু উমামাহ আল-বাহেলী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বলতে শুনেছি তিনি বলেন, তোমরা কুরআন তেলাওয়াত করো। কারণ তা কেয়ামতে তা তার পাঠ কারীর জন্য শুপারিশকারী হবে। (মুসলিম)
অতএব হে বোন! রমজানে আপনি কুরআন তেলাওয়াত করুন। কুরআন বুঝে যথাসাধ্য কুরআন মুখস্থ করুন। আর যা মুখস্থ আছে তা রিভিউ করুন যাতে আপনি ভুলে না যান।
______
❏ ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ:
রমজান হল আল্লাহর পথে মানুষকে আহবানের একটি বড় সুযোগ। আপনি আপনার আত্নীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী, বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মীদেরকে পবিত্র এ মাসে আল্লাহর পথে আহবান করে আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জন করতে পারেন। আর এ জন্য আপনি বই-পত্র, ক্যাসেট, অডিও-ভিডিও সিডি ব্যবহার করতে পারেন। দিতে পারেন উপদেশ। আর এভাবেই আপনি দাওয়াতী কাজে অংশ গ্রহণ করতে পারেন। রুটিন করে প্রতিদিন কমপক্ষে একজন মানুষকে দাওয়াত দেয়ার পরিকল্পনা নিতে পারেন। এভাবে আপনি অর্জন করতে পারেন আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশাল পুরস্কার। যেমন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : আল্লাহর শপথ! যদি তোমার মাধ্যমে আল্লাহ কোন ব্যক্তিকে পথ দেখান তাহলে তা হবে তোমার জন্য লাল উট লাভ করার চেয়েও শ্রেষ্ঠ পুরস্কার। (বর্ণনায়: বুখারী ও মুসলিম)
______
❏ সপ্তম পরিচ্ছেদ:
বান্ধবীদের সাথে অযথা আডডা দেয়া থেকে সাবধানতা অবলম্বন করুন। গীবত বা পরদোষ চর্চা, চোগলখুরী বা একজনের কথা অন্য জনের কাছে লাগিয়ে দেয়া, অশ্লীল কথা-বার্তা পরিহার করে চলুন এবং নিজ মুখকে সংযত রাখুন। যে সকল কথা-বার্তা আল্লাহ তাআলা অপছন্দ করেন তা থেকে নিজেকে দূরে রাখুন। সর্বদা সুন্দর কথা বলুন। এ সময়টা হল নিজেকে গঠন করার একটি সুযোগ। এ সুযোগকে কাজে না লাগালে আপনি ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। সুযোগ মানুষের জীবনে বার বার আসে না। ঈমানদারের প্রতিটি দিন তার জন্য একটি সুযোগ।
হাদীসে এসেছে, আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কুজাআ এলাকার দু ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে এসে ইসলাম গ্রহণ করল। একজন জিহাদের ময়দানে শহীদ হল আর অন্য জন এক বছর পরে মারা গেল। তালহা বিন উবাইদুল্লাহ রা. বলেন, আমি সপ্নে দেখলাম যে, পরে মারা যাওয়া ব্যক্তি শহীদের আগেই জান্নাতে প্রবেশ করেছে। আমি আশ্চর্য হলাম। পরে সপ্নের বিষয়টি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে বললাম। তিনি বললেন, পরের ব্যক্তি কি একটি রমজান রোযা রাখেনি? সে কি ছয় হাজার রাকআত নামাজ পড়েনি? এবং বহু সংখ্যক সুন্নাত নামাজ আদায় করেনি? (আহমাদ)
______
❏ অষ্টম পরিচ্ছেদ:
আপনার দাওয়াতের জন্য আপনার গৃহ হল প্রথম অগ্রাধিকার। প্রথমে নিজেকে নৈতিকতার শিক্ষায় আলোকিক করুন। এরপর আপনার স্বামী, আপনার ভাই, আপনার বোন আপনার সন্তানদের উপদেশ দিন। তাদেরকে নামাজ আদায় করতে, রোযা পালন করতে, কুরআন অধ্যায়ন করতে বলুন। আপনার গৃহে আপনি সুন্দর কথা ও সততার মাধ্যমে সৎকাজের আদেশ ও অন্যায় কাজের নিষেধ চালু করুন। পরিবারের সকলের হিদায়াতের জন্য দুআ-প্রার্থনা করুন। যারা ধর্মীয় ব্যাপারে উদাসীন, এ রমজান তাদের সংস্কার ও সংশোধনের একটি সুযোগ। এ সুযোগটি আপনি কাজে লাগান। এতে আপনিও সওয়াবের অংশীদার হবেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : যে ব্যক্তি কোন ভাল বা কল্যাণের পথ দেখায়, ফলে যে করে, তার মতই সে সওয়াব পায়। (মুসলিম)
তাই আপনি যদি কাউকে কুরআন তেলাওয়াতে উদ্বুদ্ধ করেন আর সে ব্যক্তি তেলাওয়াত করে তাহলে আপনি সেই তেলাওয়াতের সওয়াব পাবেন। সকল সৎকর্মের ব্যাপারে এ নিয়মই আল্লাহ তাআলার কাছে গ্রহণযোগ্য।
______
❏ নবম পরিচ্ছেদ:
বাজার আর মার্কেট থেকে যথাসম্ভব নিজেকে দূরে রাখুন। কেননা বাজার হল ফিতনার স্থান ও আল্লাহর জিকির থেকে দূরে রাখার উপকরণ। তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: আল্লাহ তাআলার কাছে সবচেয়ে উত্তম স্থান হল মসজিদ আর সবচেয়ে অপছন্দের স্থান হল বাজার (মার্কেট) । (মুসলিম)
বাজারে যাওয়ার ব্যাপারে রমজান মাস ও অন্য মাস যেন সমান না হয়ে যায়। এ পবিত্র মাসে পাপাচারে লিপ্ত হওয়া থেকে সাবধানতা অবলম্বন করুন। নিজের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাকে ভয় করুন। পর পুরুষদের সাথে দেখা সাক্ষাত থেকে নিজেকে দূরে রাখুন। এ মাসে যদি আপনি বাজারে যাওয়া বন্ধ রাখেন তাহলে এমন কী ক্ষতি হতে পারে? তাই হাট বাজারে যাওয়া থেকে বিরত থেকে আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জনের কাজগুলো বেশী করে সম্পাদন করুন।
______
❏ দশম পরিচ্ছেদ:
রমজান মাসে উমরা পালনের বিশেষ ফজিলত রয়েছে। হাদীসে এসেছে : ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন বিদায় হজ থেকে ফিরলেন তখন এক আনসারী মহিলা যার নাম ছিল উম্মে সিনান, তাকে জিজ্ঞেস করলেন, আমাদের সাথে হজ করতে তোমাকে কিসে বাধা দিল? সে উত্তর দিল, অমুকের বাপ (অর্থাৎ তার স্বামী)। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের (স্বামী স্ত্রী) উভয়কে বললেন, যখন রমজান আসবে তখন তুমি উমরা করবে, কারণ সে সময় উমরা হল হজের সমতুল্য। অথবা তিনি বলেছেন, রমজান মাসে উমরা করা আমার সাথে হজ করার সমতুল্য। (বুখারী)
এমনিতেই উমরার রয়েছে বিশেষ সওয়াব আর রমজানে উমরা করার মধ্যে রয়েছে বেশী সওয়াব। সম্মানিত মাসে, সম্মানিত শহরে, সিয়াম রেখে সম্মানিত অবস্থায় উমরা করার মর্যাদাই আলাদা। যখন আল্লাহ আপনাকে রমজানে উমরা করার তাওফীক দিলেন, তখন শালীনভাবে, শরয়ী নিয়ম-নীতি অনুসরণ করে উমরা করার জন্য বের হবেন। আপনার মনে রাখতে হবে যখন এ মাসে প্রতিটি নেক আমলের সওয়াব কয়েকগুণ বেশী দেয়া হয়, তখন সে মাসে কোন পাপ সংঘটিত হলে তার শাস্তিও বেশী হতে পারে। (আল্লাহই অধিক অবগত)
______
❏ একাদশ পরিচ্ছেদ:
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এ মাসে সকল কল্যাণের দ্বার উম্মুক্ত করে দিয়েছেন। আর মানুষের মাধ্যমে অন্যকে রিযিক দান করেন। তাই এ মাসে আপনি বেশী পরিমাণে দান সদকা করবেন। আল্লাহ তাআলা মুমিনদের গুণাবলি বর্ণনাকালে দান সদকাকারীদেরও প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন:
كَانُوا قَلِيلًا مِنَ اللَّيْلِ مَا يَهْجَعُونَ ﴿17﴾ وَبِالْأَسْحَارِ هُمْ يَسْتَغْفِرُونَ ﴿18﴾ وَفِي أَمْوَالِهِمْ حَقٌّ لِلسَّائِلِ وَالْمَحْرُومِ ﴿19﴾
রাতের সামান্য অংশ এরা ঘুমিয়ে কাটাতো। আর রাতের শেষ প্রহরে এরা ক্ষমা প্রার্থনায় রত থাকতো। আর তাদের ধনসম্পদে রয়েছে প্রার্থী ও বঞ্চিতের অধিকার। (সূরা যারিয়াত-১৭-১৯)
এ আয়তসমূহের আলোকে আল্লাহ তাআলার নিকট প্রশংসিত কাজগুলো আপনি সহজে সম্পাদন করতে পারেন এ পবিত্র মাসে। রাতে কম ঘুমানো, শেষ প্রহরে নামাজ পড়া ও আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া। আর বেশী করে দরিদ্র, অসহায়, অভাবী লোকদের দান খয়রাত করতে পারেন।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দান সদকাহ করতে উৎসাহিত করেছেন বার বার। তিনি বলেছেন : একটি খেজুর ভেঙ্গে তা দান করে হলেও তুমি জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচতে পারো। (মুসলিম)
হাদীসে আরো এসেছে : আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: সাত ব্যক্তি আল্লাহর ছায়ায় আশ্রয় পাবে যেদিন তার ছায়া ব্যতীত কোন ছায়া থাকবে না। এ সাত ব্যক্তির একজন হলেন, যে দান সদকা করেছে এমন গোপনে যে তার ডান হাত কী দান করল তা তার বাম হাত জানে না। (বুখারী ও মুসলিম)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মেয়েদের উদ্দেশ্য বলেছেন : হে মহিলাগণ! তোমরা দান সদকা করো। বেশী করে আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। কারণ আমি তোমাদের অধিকহারে জাহান্নামে দেখেছি। (মুসলিম)
______
❏ দ্বাদশ পরিচ্ছেদ:
নিজের ভাল মন্দ কাজের হিসাব নেয়া, আত্ন-সমালোচনা বা মুহাসাবা করার উত্তম সময় হল পবিত্র রমজান মাস। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: বুদ্ধিমান হল ঐ ব্যক্তি যে নিজের হিসাব নিজে করে থাকে আর মৃত্যু পরবর্তী জীবনের জন্য কাজ করে। আর অক্ষম হল ঐ ব্যক্তি যে নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে ও আল্লাহ ব্যাপারে অনেক ধরনের আশা আকাংখা পোষণ করে। (তিরমিজী)
হাসান রহ. বলতেন, হে মানুষ! তুমি একা মৃত্যু বরণ করবে। একাকী কবরে যাবে। একাকী উত্থিত হবে। আর যখন তোমার হিসাব নেয়া হবে তখন তুমি একাই থাকবে।
ইবনে আউন রহ. বলেছেন, নিজের কাজের আধিক্যের উপর নির্ভর করো না। কারণ, তুমি জানো না এগুলো কবুল করা হয়েছে কি না? আর তোমার পাপ সম্পর্কে নিশ্চিত থেকো না। তুমি তো জানো না এগুলো ক্ষমা করা হয়েছে কি না। তোমার সকল আমলের খবর তোমার অজানা।
______
❏ ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ:
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার, সুন্দর আচরণ ও তাদের খেদমত করা আমাদের উপর অপরিহার্য দায়িত্ব হিসাবে স্থির করেছেন। তিনি বলেন:
﴿ فَلاَ تَقُل لَّهُمَا أُفٍّ وَلاَ تَنْهَرْهُمَا ﴾ [الإسراء:23].
তবে তাদেরকে উফ বলো না এবং তাদের ধমক দিও না। (সূরা আল ইসরা-২৩)
.
তিনি আরো বলেন:
﴿ وَاخْفِضْ لَهُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحْمَةِ ﴾ [الإسراء:24].
আর তাদের উভয়ের জন্য দয়াপরবশ হয়ে বিনয়ের ডানা নত করে দাও। (সূরা আল ইসরা-২৪)
আল্লাহর পথে জিহাদ যুদ্ধ করা একটি শ্রেষ্ঠ আমল। এতে রয়েছে অত্যন্ত কষ্ট ও জীবনের ঝুকি। এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে এসে জিহাদে যোগদানের অনুমতি চাইল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার মাতা-পিতা কি জীবিত? সে বলল, হ্যা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তাহলে তুমি তাদের মধ্যে জিহাদ করো। অর্থাৎ তাদের সেবা-যত্ন করা তোমার জন্য একটি জিহাদ। (বুখারী)
মাতা-পিতার প্রতি করুণা করা, তাদের দয়া ভালবাসার সাথে আদর যত্ন করা, তাদের আনুগত্য করা, তাদের জীবনোপকরণের ব্যবস্থা করা, তাদের উপহার দেয়া, তাদের খুশী করা ইত্যাদির মাধ্যমে তাদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব কর্তব্য আদায় করতে পারি। মনে রাখতে হবে মাতা-পিতার সাথে সদাচরণ করা শ্রেষ্ঠ নেক আমলের মধ্য গণ্য। যেমন হাদীসে এসেছে : ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে প্রশ্ন করলাম, আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় আমল কী? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: ওয়াক্ত মত নামাজ আদায় করা। জিজ্ঞেস করলাম, তারপর কোনটি ? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: মাতা-পিতার সাথে সদাচরণ করা। জিজ্ঞেস করলাম, তারপর কোনটি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: আল্লাহর পথে জিহাদ করা। (বুখারী ও মুসলিম)
হে বোন! আল্লাহ আপনাকে বরকত দান করুন! আপনি সর্বদা আপনার মাতা-পিতার সাথে সুন্দর আচরণ করবেন যদি তারা জীবিত থাকেন অথবা মৃত হলে তাদের জন্য আল্লাহর কাছে দুআ করবেন। তাদের পক্ষে দান ছদকা করবেন। হয়ত আল্লাহ দয়াময় আপনার মাতা-পিতাকে ক্ষমা করে দেবেন।
পবিত্র এ মাসে অন্যান্য আত্নীয় স্বজনের সাথে সম্পর্ক সুন্দর করুন। তাদের প্রতি যে দায়িত্ব-কর্তব্য রয়েছে সেগুলো আদায়ে যত্নবান হোন। তবে তাদের সাথে অযথা গল্প-গুজব, পরদোষ চর্চা ইত্যাদি থেকে দূরে থাকুন।
______
❏ চতুর্দশ পরিচ্ছেদ:
তাওবা করা: এ কথাটি আমরা খূব বেশী শুনি। বারবার উচ্চারণ করি। কিন্তু মহিলাদের জীবনে এর বাস্তবায়ন অত্যন্ত কম। বরং তারা অনেক সময় গুনাহের কাজে লিপ্ত হয় কিন্তু অনুভব করে না যে এটি পাপের কাজ, এটা বর্জন করে তাওবা করা কর্তব্য। যেমন ধরুন মিউজিক, গান-বাজনা ইত্যাদি শোনা। আবার যারা এগুলো করে তাদের প্রশংসা করা হয়ে থাকে। এমনিভাবে টিভির পর্দায় পুরুষ দেখা। এগুলো যেমন পাপের কাজ তেমনি এগুলোর জন্য সময়ের অপচয় করা আরো পাপ। পবিত্র এ মাসে এ সকল পাপ থেকে তাওবা করা একান্ত দরকার।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন:
﴿ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعاً أَيُّهَا الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ ﴾ [النور:31]
তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা করো যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো। (সূরা আন নূর-৩১)
তিনি আরো বলেন:
﴿ إِنَّ اللّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ ﴾ [البقرة:222]
অবশ্যই আল্লাহ তাওবাকারীদের ভালবাসেন আর ভালবাসেন পবিত্রতা অর্জনকারীদের। (সূরা বাকারা-২২২
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: সকল মানব সন্তান ভুল করে থাকে। তবে তাদের মধ্যে সর্বোত্তম হল তারা, যারা তাওবা করে। (তিরমিজী ও হাকেম)
হে বোন! তাই আর দেরী নয়। অনেক দেরী হয়ে গেছে। তাড়াতাড়ি তাওবা করুন। পিছনের সকল পাপ পঙ্কিলতা ধুয়ে ফেলুন আর জীবনের জন্য একটি নতুন পাতা খুলুন। জীবনটাকে আল্লাহ তাআলার আনুগত্য ও সততার দ্বারা সজ্জিত করুন। সে দিন আসার পূর্বে নিজের হিসাব নিন
يَوْمَ لَا يَنْفَعُ مَالٌ وَلَا بَنُونَ ﴿88﴾ إِلَّا مَنْ أَتَى اللَّهَ بِقَلْبٍ سَلِيمٍ ﴿89﴾যেদিন ধন-সম্পদেও সন্তান-সন্ততি কোন উপকারে আসবে না। তবে যে আল্লাহর কাছে আসবে সুস্থ অন্তরে। (সূরা আশ শুআরা, আয়াত ৮৮-৮৯)
আর মনে করুন সে সময়ের কথা যখন আপনাকে বড়ই পাতা আর কর্পুর দিয়ে গোসল করানো হবে এরপর আপনাকে পাঁচ টুকরো কাপড় পরানো হবে। আর দুনিয়ার সকল সাজ সজ্জা অলঙ্কার আপনার থেকে আলাদা করে ফেলা হবে চিরতরে।
▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂▂
লেখক : আব্দুল মালেক আল-কাসেম
অনুবাদক : আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান
সূত্র : ইসলাম প্রচার ব্যুরো, রাবওয়াহ, রিয়াদ, সৌদিআরব
মাশাআল্লাহ