কদরের রাত্রে রাসূল সা. কি কাজ করতেন

কুরআনে কারিমে এ রাত্রকে লাইলাতুল মুবারাকাহ বলা হয়েছে। আমি একে নাযিল করেছি, এক বরকতময় রাতে, নিশ্চয় আমি সতর্ককারী, এ রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়। আমার পক্ষ থেকে আদেশক্রমে, আমিই প্রেরণকারী। ২-৫।

এমনকি এই রাতের ব্যপারে পুরো একটি সূরাই নাযিল করা হয়েছে, আমি একে নাযিল করেছি শবে-কদরে।শবে-কদর সমন্ধে আপনি কি জানেন!শবে-কদর হল এক হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। এতে প্রত্যেক কাজের জন্যে ফেরেশতাগণ ও রূহ অবতীর্ণ হয় তাদের পালনকর্তার নির্দেশক্রমে। এটা নিরাপত্তা, যা ফজরের উদয় পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।সূরা কদর।

রাসূলুল্লাহ সা. নিজে ‘লাইলাতুল কদর’ লাভ করার জন্য রমজানের শেষ দশরাত জাগ্রত থেকে ইবাদতে কাটিয়েছেন এবং উম্মতে মুহাম্মাদীকেও সারা রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগী করার নির্দেশ দিয়েছেন।

হযরত আবূ হুরায়রাহ্ রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সাওয়াব লাভের আশায় রমাযান মাসে সিয়াম পালন করবে, তার আগের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। আর যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সাওয়াব লাভের আশায় ‘ইবাদাতে রাত কাটাবে, তার আগের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। আর যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সাওয়াব লাভের আশায় লায়লাতুল কদরে ‘ইবাদাতে কাটাবে তারও আগের সব গুনাহ ক্ষমা করা হবে। (বুখারি, মুসলিম)

আয়েশা রা. থেকে বর্ণনা করেন, ‘রাসুল সা. অন্য দিনের তুলনায় রমজানের শেষ দশ দিন বেশি এবাদতে সচেষ্ট থাকতেন।’ (বুখারি, মুসলিম,)

রাসূল সা. বলেন, শবে কদরকে নির্দিষ্ট না করার কারণ হচ্ছে যাতে বান্দা কেবল একটি রাত জাগরণ ও কিয়াম করেই যেন ক্ষ্যান্ত না হয়ে যায় এবং সেই রাতের ফজিলতের উপর নির্ভর করে অন্য রাতের ইবাদত ত্যাগ করে না বসে। তাই বান্দার উচিত শেষ দশকের কোন রাতকেই কম গুরুত্ব না দেয়া এবং পুরোটাই ইবাদাতের মাধ্যমে শবে কদর অন্বেষণ করা।

উম্মুল মুমিনিন আয়েশা রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসূল, আমি যদি জানতে পারি যে, কোন রাতটি লাইলাতুল কদর তাহলে তখন কোন দুয়াটি পাঠ করব? তিনি বললেন, তুমি বল, اللَّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ كَرِيمٌ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّى

‘হে আল্লাহ, আপনি মহানুভব ক্ষমাশীল। আপনি ক্ষমা করা পছন্দ করেন। অত:এব আপনি আমাকে ক্ষমা করুন।’ (তিরমিজি, অনুচ্ছেদ, কোন দুয়াটি শ্রেষ্ঠ। তিনি বলেন: হাদীসটি হাসান, সহিহ)।

এ রাতে কোরআন তেলাওয়াতের বিশেষ ফজিলত রয়েছে। পবিত্র এই রাতেই মহাগ্রন্থ আল কোরআন অবতীর্ণ হয়।
এ জন্য কোরআনের সঙ্গে এই রাতের সম্পর্ক ওতপ্রোত।

অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় তেলাওয়াতের ফজিলত আত্মসমালোচনা বা আত্মবিচার এ রাতের বিশেষ আমল। আমরা নিজেই নিজের পর্যালোচনা করি, জীবনের ফেলে আসা দিনগুলোতে আল্লাহর কতগুলো বিধান অমান্য করেছি।
সুতরাং অতীতের সব ধুলি মুছতে এ রাতটাকে আমরা কাজে লাগাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *